কুরআন অধ্যয়ন প্রতিযোগিতা ২০২৫
প্রস্তুতি সহায়ক তাফসীর নোট পর্বঃ ১৬
সূরা কলম ১৭-৫২ আয়াত
‘তাদেরকে’ বলতে মক্কাবাসীকে বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ, আমি তাদেরকে ধন-মাল দান করেছিলাম। যাতে তারা আল্লাহর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে, কুফরী ও অহংকার করার জন্য নয়। কিন্তু তারা কুফরী এবং অহংকারের পথ অবলম্বন করেছিল। ফলে আমি তাদেরকে দুর্ভিক্ষ ও অনাবৃষ্টি দিয়ে পরীক্ষা করি। নবী (সাঃ)-এর অভিশাপের কারণে তাতে তারা কিছু দিন ভুগেছিল।
আলোচ্য আয়াতের আল্লাহ তা’আলা একজন বাগানের মালিকের সন্তানদের ঘটনা উল্লেখ করছেন। কৃপণতার জন্য যেমন আল্লাহ তা’আলা তাদের শাস্তি দিয়েছেন তেমন মক্কাবাসী কাফিরদেরও শাস্তি প্রদান করেছেন।
উদ্যানের মালিকদের কাহিনীঃ হযরত ইবনে আব্বাস প্রমুখের ভাষ্য অনুযায়ী এই উদ্যান ইয়ামনে অবস্থিত ছিল। হযরত যায়েদ ইবনে যুবায়র-এর এক রেওয়ায়েতে আছে যে, ইয়ামনের রাজধানী ও প্রসিদ্ধ শহর ‘সানআ’ থেকে ছয় মাইল দূরে এই উদ্যান অবস্থিত ছিল। কারও কারও মতে এটা আবিসিনিয়ায় ছিল—(ইবনে কাসীর) উদ্যানের মালিকরা ছিল আহলে-কিতাব। ঈসা (আ)-র আকাশে উত্থিত হওয়ার কিছুকাল পরে এই ঘটনা ঘটে।–(কুরতুবী)
আলোচ্য আয়াতে তাদেরকে ‘আসহাবুল জান্নাত’ তথা উদ্যানওয়ালা নামে অভিহিত করা হয়েছে। কিন্তু আয়াতের বিষয়বস্তু থেকে জানা যায় যে, তাদের মালিকানাধীন কেবল উদ্যানই ছিল না, চাষাবাদের ক্ষেতও ছিল। তবে উদ্যানের প্রসিদ্ধির কারণে উদ্যানওয়ালা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মোহাম্মদ ইবনে মারওয়ানের বাচনিক হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত এই ঘটনা নিম্নরূপ :
ইয়ামনের ‘সানআ’ থেকে ছয় মাইল দূরে ছরওয়ান নামক একটি উদ্যান ছিল। একজন সৎকর্মপরায়ণ ব্যক্তি এই উদ্যানটি তৈরী করেছিলেন। তিনি ফসল কাটার সময় কিছু ফসল ফকীর মিসকীনদের জন্য রেখে দিতেন। তারা সেখান থেকে খাদ্যশস্য আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করত। এমনিভাবে ফসল মাড়ানোর সময় যেসব দানা ভূষির মধ্যে থেকে যেত, সেগুলোও ফকীর-মিসকীনদের জন্য রেখে দিতেন। এই নিয়ম অনুযায়ী উদ্যানের বৃক্ষ থেকে ফল আহরণ করার সময় যেসব ফল নিচে পড়ে যেত, সেগুলোও ফকীর মিসকীনদের জন্য রেখে দিতেন। এ কারণেই ফসল কাটা ও ফল আহরণের সময় বিপুল সংখ্যক ফকীর-মিসকীন সেখানে সমবেত হত। এই সাধু ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার তিন পুত্র উদ্যান ও ক্ষেতের উত্তরাধিকারী হল। তারা পরস্পরে বলাবলি করলঃ আমাদের পরিবার-পরিজন বেড়ে গেছে। সেই তুলনায় ফসলের উৎপাদন কম। তাই এখন ফকীর মিসকীনদের জন্য এত শস্য ও ফল রেখে দেওয়ার সাধ্য আমাদের নেই। কোন কোন রেওয়ায়েতে আছে, পুত্রত্রয় উচ্ছৃঙ্খল যুবকদের ন্যায় বললঃ আমাদের পিতা বেওকুফ ছিল। তাই বিপুল পরিমাণে খাদ্যশসা ও ফল মিসকীনদের জন্য রেখে দিত। অতএব আমাদের কর্তবা এই প্রথা বন্ধ করে দেওয়া। অতঃপর তাদের কাহিনী স্বয়ং কোরআনের ভাষায় নিম্নরূপঃإِذْ أَقْسَمُوا لَيَصْرِمُنَّهَا مُصْبِحِينَ – অর্থাৎ তারা পরস্পরে শপথ করে বললঃ এবার আমরা সকাল সকালই যেয়ে ক্ষেতের ফসল কেটে আনব, যাতে ফকীর-মিসকীনরা টের না পায় এবং পেছনে পেছনে না চলে। এই পরিকল্পনার প্রতি তাদের এতটুকু দৃঢ় আস্থা ছিল যে, ‘ইনশাআল্লাহ্’ বলারও প্রয়োজন মনে করল না। আগামীকালের কোন কাজ করার কথা বলার সময় ‘ইনশআল্লাহ্ আগামীকাল এ কাজ করব’ বলা সুন্নত। তারা এই সুন্নতের পরওয়া করল না। কোন কোন তফসীরবিদ وَلَا يَسْتَثْنُونَ এর এরূপ অর্থ করেছেন যে, আমরা সম্পূর্ণ খাদ্যশস্য ও ফল নিয়ে আসব এবং ফকীর-মিসকীনদের অংশ বাদ দেব না। -(মাযহারী)
অতঃপর আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে এই ক্ষেতে ও উদ্যানে এক বিপদ হানা দিল। কোন কোন রেওয়ায়েতে আছে যে, একটি অগ্নি এসে সমস্ত তৈরী ফসলকে জ্বালিয়ে ভস্স করে দিল। وَهُمْ نَائِمُونَ– অর্থাৎ এই আযাব রাত্রিবেলায় তখন অবতীর্ণ হয়েছিল, যখন তারা সবাই নিদ্রামগ্ন।
صرم শব্দের অর্থ ফল ইত্যাদি কর্তন করা।صَّرِيمِএর অর্থ কর্তিত। উদ্দেশ্য এই যে, ফসল কেটে নেওয়ার পর ক্ষেত যেমন সাফ ময়দান হয়ে যায়, অগ্নি এসে ক্ষেতকে সেইরূপ করে দিল।صَّرِيمِ-এর অর্থ কালো রাত্রিও হয়। এই অর্থের দিক দিয়ে উদ্দেশ্য এই যে, ফসলও কালো রাত্রির ন্যায় কালো ভস্ম হয়ে গেল।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, ওটা আঙ্গুরের বাগান ছিল। তারা চুপে চুপে কথা বলতে বলতে চললো যাতে কেউ শুনতে না পায় এবং গরীব মিসকীনরা কোন টের না পায়। যেহেতু তাদের গোপনীয় কথা ঐ আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা’আলার নিকট গোপন থাকতে পারে না সেই হেতু তিনি বলেন, তাদের এ গোপনীয় কথা ছিলঃ ‘তোমরা সতর্ক থাকবে, যেন কোন গরীব মিসকীন টের পেয়ে আজ আমাদের বাগানে আসতে না পারে। কোনক্রমেই কোন মিসকীনকে আমাদের বাগানে প্রবেশ করতে দিবে না।’ এভাবে দৃঢ় সংকল্পের সাথে গরীব দরিদ্রদের প্রতি ক্রোধের ভাব নিয়ে তারা তাদের বাগানের পথে যাত্রা শুরু করলো। তাদের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে, বাগানের ফল তাদের দখলে রয়েছে। সুতরাং তারা ফল আহরণ করে সবই বাড়ীতে নিয়ে আসবে।
حَرْدٍ এ শব্দের অর্থ নিষেধ করা ও রাগা, গোসা দেখানো। উদ্দেশ্য এই যে, তারা ফকীর-মিসকীনকে কিছু না দিতে সক্ষম, এরূপ ধারণা নিয়ে রওয়ানা হল। যদি কোন ফকীর এসেও যায়, তবে তাকে হটিয়ে দেবে।
কিন্তু বাগানে পৌঁছে তারা হতভম্ব হয়ে পড়ে। দেখে যে, সবুজ-শ্যামল শস্যক্ষেত এবং পাকা পাকা ফলের গাছ সব ধ্বংস ও বরবাদ হয়ে গেছে। ফলসহ সমস্ত গাছ পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। এখন এগুলোর আধা পয়সারও মূল্য নেই। গাছগুলোর জ্বলে যাওয়া কালো কালো কাণ্ড ভয়াবহ আকার ধারণ করে দাঁড়িয়ে আছে। প্রথমতঃ তারা মনে করলো যে, ভুল করে তারা অন্য কোন বাগানে এসে পড়েছে। আবার ভাবার্থ এও হতে পারে যে, তারা বললো ও আমাদের কাজের পন্থাই ভুল ছিল, যার পরিণাম এই দাঁড়ালো। যা হোক পরক্ষণেই তাদের ভুল ভেঙ্গে গেল। তারা বললোঃ ‘আমাদের বাগান তো এটাই, কিন্তু আমরা হতভাগ্য বলে আমরা বাগানের ফল লাভে বঞ্চিত হয়ে গেলাম। তাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সৎ ও ন্যায়পন্থী ছিল সে তাদেরকে বললোঃ দেখো, আমি তো তোমাদেরকে পূর্বেই বলেছিলাম। তোমরা ইনশাআল্লাহ্ বলছো না কেন?’ সুদ্দী (রঃ) বলেন যে, তাদের যুগে সুবহানাল্লাহ্ বলাও ইনশাআল্লাহ্ বলার স্থলবর্তী ছিল। ইমাম ইবনে জারীর (রঃ) বলেন যে, এর অর্থই হলো ইনশাআল্লাহ্ বলা। এটাও বলা হয়েছে যে, তাদের উত্তম ব্যক্তি তাদেরকে বলে? “দেখো, আমি তো তোমাদেরকে পূর্বেই বলেছিলাম যে, তোমরা কেন আল্লাহ্ তা’আলার পবিত্রতা ঘোষণা এবং প্রশংসা করছো না?
এখন তারা বুঝতে পেরেছে যে, পিতা যে নিয়মে কাজ করেছেন তার বিপরীত পদক্ষেপ গ্রহণ করে আমরা বড়ই ভুল করেছি। যার শাস্তি আল্লাহ আমাদেরকে দিয়েছেন। এ থেকে এও বোঝা গেল যে, গোনাহ করার দৃঢ় সংকল্প করা ও তার প্রতি প্রাথমিক পদক্ষেপও গোনাহ করার মতই অপরাধ। এতে পাকড়াও হতে পারে।
প্রথমে একে অপরকে দোষী সাব্যস্ত করার পর যখন তারা চিন্তা করল, তখন সবাই এক বাক্যে স্বীকার করল যে, আমরা সবাই অবাধ্য ও গোনাহগার। তাদের এই অনুতপ্ত স্বীকারোক্তি তওবার স্থলাভিষিক্ত ছিল। এ কারণেই তারা আশাবাদী হতে পেরেছিল যে, আল্লাহ্ তা’আলা তাদেরকে আরও উত্তম উদ্যান দান করবেন ।
তারা আপোসে অঙ্গীকারবদ্ধ হল যে, আল্লাহ যদি পুনরায় আমাদেরকে মাল-ধন দান করেন, তাহলে আমরা পিতার মতই তা হতে গরীবদের অধিকার আদায় করব। আর এই জন্যই তারা লজ্জিত হয়ে তওবা করে প্রতিপালকের নিকট আশার কথাও ব্যক্ত করল।
মক্কাবাসীদের উপর দুর্ভিক্ষরূপী আযাবের সংক্ষিপ্ত এবং উদ্যান মালিকদের ক্ষেত জ্বলে যাওয়ার বিস্তারিত বর্ণনার পর সাধারণ বিধি বর্ণনা করা হয়েছে যে, যখন আল্লাহর আযাব আসে, তখন এমনিভাবেই আসে। দুনিয়ার এই আযার আসার পরও তাদের পরকালের আযাব দূর হয়ে যায় না। বরং পরকালের আযাব ভিন্ন এবং তদপেক্ষা কঠোর হয়ে থাকে।
মক্কার মুশরিকরা বলত যে, যদি কিয়ামত হয়, তাহলে সেখানেও আমরা মুসলিমদের থেকে উত্তম অবস্থায় থাকব। যেমন, দুনিয়াতে আমরা মুসলিমদের চেয়ে বেশী সমৃদ্ধি ও স্বাচ্ছন্দ্যে আছি। আল্লাহ তাআলা তাদের উত্তরে বললেন, এটা কিভাবে সম্ভব হতে পারে যে, আমি মুসলিমদের অর্থাৎ আমার আনুগত্যশীলদেরকে পাপিষ্ঠদের, অর্থাৎ আমার অবাধ্যজনদের মত গণ্য করব? অর্থাৎ, এটা কোন দিন হতে পারে না যে, আল্লাহ তাআলা ন্যায়পরায়ণতা ও সুবিচারের বিপরীত করে উভয়কে এক সমান গণ্য করবেন।
এরপর মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ আমি কি আত্মসমর্পণকারীদেরকে অপরাধীদের সদৃশ গণ্য করবো? অর্থাৎ আল্লাহ তা’আলা অনুগত ও অপরাধীর মধ্যে কোন পার্থক্য করবেন না, এটা বিবেক-বুদ্ধির পরিপন্থী। বিশাল বিশ্ব-জাহানের স্রষ্টা এমন বিচার-বুদ্ধিহীন হবেন, এটা তোমরা ধারণা করলে কিভাবে? তোমরা মনে করে নিয়েছো, এ পৃথিবীতে কারা তাঁর হুকুম-আহকাম ও বিধি-বিধান মেনে চললো এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকলো আর কারা তার তোয়াক্কা না করে সব রকমের গোনাহ, অপরাধ এবং জুলুম-অত্যাচার চালালো তা তিনি দেখবেন না! তোমরা ঈমানদারদের দুর্দশা ও দূরবস্থা এবং নিজেদের স্বাচ্ছন্দ ও সচ্ছলতা দেখতে পেয়েছো ঠিকই কিন্তু নিজেদের এবং তাদের নৈতিক চরিত্র ও কাজ-কর্মের পার্থক্য তোমাদের নজরে পড়েনি। তাই আগাম বলে দিয়েছো যে, আল্লাহর দরবারেও এসব অনুগতদের সাথে অপরাধীদের ন্যায় আচরণ করা হবে। কিন্তু তোমাদের মত পাপীদের দেয়া হবে জান্নাত।
আল্লাহ পাক বলেনঃ তোমাদের কী হয়েছে? তোমাদের এ কেমন সিদ্ধান্ত? তোমাদের হাতে কি আল্লাহ তা’আলার পক্ষ হতে অবতারিত এমন কোন কিতাব রয়েছে যা তোমাদের কাছে রক্ষিত রয়েছে এবং পূর্ববর্তীদের নিকট হতে তোমরা তা প্রাপ্ত হয়েছে? আর তাতে তা-ই রয়েছে যা তোমরা চাচ্ছ ও বলছো? অথবা তোমাদের সাথে কি আমার কোন দৃঢ় অঙ্গীকার রয়েছে যে, তোমরা যা কিছু বলছো তা হবেই? এবং তোমাদের এই বাজে ও ঘৃণ্য বাসনা পূর্ণ হয়েই যাবে?
এরপর আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা’আলা স্বীয় নবী (সঃ)-কে বলেনঃ হে নবী (সঃ)! তুমি তাদেরকে জিজ্ঞেস কর যে, তাদের মধ্যের এই দাবীর যিম্মাদার কে? তাদের কি কোন দেব-দেবী আছে? থাকলে তারা তাদের ঐ দেব-দেবীদেরকে উপস্থিত করুক, যদি তারা সত্যবাদী হয়।
আয়াতে বলা হয়েছে, “যেদিন পায়ের গোছা উম্মোচিত করা হবে”। পায়ের গোছা উম্মোচিত করার এক অর্থ অবস্থা কঠিন হওয়াও হয়। আর তখন অর্থ হবে, যেদিন মানুষের অবস্থা অত্যন্ত কঠিন হবে। [বাগভী; ফাতহুল কাদীর] কিন্তু এ আয়াতের তাফসীরে সহীহ হাদীসে স্পষ্ট এসেছে যে, এখানে মহান আল্লাহর “পায়ের গোছা” বোঝানো হয়েছে। আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আমাদের রব তাঁর পায়ের গোছা” অনাবৃত করবেন, ফলে প্রতিটি মুমিন নর ও নারী তাঁর জন্য সিজদাহ করবেন। পক্ষান্তরে যারা দুনিয়াতে প্রদর্শনেচ্ছা কিংবা শুনানোর উদ্দেশ্যে সিজদাহ করেছিল, তারা সিজদাহ করতে সক্ষম হবে না। তারা সিজদাহ করতে যাবে কিন্তু তাদের পিঠ বাঁকা হবে না।” [বুখারী: ৪৯১৯]
আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা’আলা বলেনঃ তাদের দৃষ্টি উপরের দিকে উঠবে না, তারা লাঞ্ছিত ও অপমানিত হবে। কেননা, তারা দুনিয়ায় বড়ই উদ্ধত ও অহংকারী ছিল। সুস্থ ও নিরাপদ অবস্থায় যখন তাদেরকে সিজদার জন্যে আহ্বান করা হতো তখন তারা সিজদা করা হতে বিরত থাকতো, যার শাস্তি এই হলো যে, আজ তারা সিজদা করতে চাচ্ছে, কিন্তু করতে পারছে না। পক্ষান্তরে, পূর্বে সিজদা করতে পারতো কিন্তু করতো না। আল্লাহর দ্যুতি বা তাজাল্লী দেখে সমস্ত মু’মিন সিজদায় পতিত হয়ে যাবে। কিন্তু কাফিররা ও মুনাফিকরা সিজদা করতে পারবে না। তাদের কোমর তক্তার মত শক্ত হয়ে যাবে। সুতরাং ঝুঁকতেই পারবে না, বরং পিঠের ভরে চিৎ হয়ে পড়ে যাবে। দুনিয়াতেও তাদের অবস্থা মু’মিনদের বিপরীত, পরকালেও তাদের অবস্থা হবে মুমিনদের বিপরীত।
এরপর মহাপ্রতাপান্বিত আল্লাহ বলেনঃ আমাকে এবং আমার এই হাদীস অর্থাৎ কুরআনকে অবিশ্বাসকারীদের ছেড়ে দাও। এতে বড়ই ভীতি প্রদর্শন ও ধমক রয়েছে। অর্থাৎ হে নবী (সঃ)! তুমি থামো, আমি এদেরকে দেখে নিচ্ছি। তুমি দেখতে পাবে, কিভাবে আমি এদেরকে ধীর ধীরে পাকড়াও করবো। এরা ঔদ্ধত্য ও অহংকারে বেড়ে চলবে, আমার অবকাশ প্রদানের রহস্য এরা উপলব্ধি করতে পারবে না, হঠাৎ করে আমি এদেরকে কঠিনভাবে পাকড়াও করবো। আমি এদেরকে বাড়াতে থাকবো। এরা মদমত্ত হয়ে যাবে। এরা এটাকে সম্মান মনে করবে, কিন্তু মূলে এটা হবে অপমান ও লাঞ্ছনা। যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেন -“আমি যে তাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান সন্ততি বৃদ্ধি করছি, এর মাধ্যমে আমি তাদের কল্যাণ সাধন করছি এটাই কি তারা ধারণা করছে? (এটা কখনো নয়) বরং তারা বুঝে না।” (২৩:৫৫-৫৬) আল্লাহ পাক অন্যত্র বলেনঃ “যখন তারা আমার ওয়ায ও নসীহত ভুলে বসে তখন আমি তাদের জন্যে সব জিনিসের দরজা উন্মুক্ত করে দিই, অতঃপর যখন তারা এজন্যে ঔদ্ধত্য ও অহংকার প্রকাশ করতে থাকে তখন অকস্মাৎ আমি তাদেরকে পাকড়াও করি, ফলে তাদের সব আশা আকাঙ্ক্ষা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।” (৬:৪৪) আর এখানে মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ বলেনঃ আমি তাদেরকে সময় দিয়ে থাকি, আমার কৌশল অত্যন্ত বলিষ্ঠ।
সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আল্লাহ তা’আলা অত্যাচারীদেরকে অবকাশ দেন, অতঃপর যখন ধরেন তখন আর ছেড়ে দেন না।” তারপর তিনি নিম্নের আয়াতটি পাঠ করেনঃ “তোমার প্রতিপালকের পাকড়াও এরূপই। যখন তিনি কোন অত্যাচারী জনপদকে পাকড়াও করেন, তখন তাঁর পাকড়াও কঠিন যন্ত্রণাদায়ক হয়ে থাকে।” (১১:১০২)
আল্লাহ তা’আলা কর্তৃক তোমাদের বিজয় ও সাহায্য দেয়া এবং তোমাদের এসব বিরোধীদের পরাজিত করার চূড়ান্ত ফায়সালার সময় এখনও বহু দূরে। চূড়ান্ত ফয়সালার সে সময়টি আমার পূর্ব পর্যন্ত এ দ্বীনের তাবলীগ ও প্রচারের পথে যত দুঃখ-কষ্ট ও মুসিবত আসবে তা ধৈর্যের সাথে বরদাশত করতে থাকো।
فَاصْبِر এ ‘ফা’ হরফটি তাফরী’র (পরবর্তী বাক্যকে পূর্বোক্ত বাক্যের শাখাস্বরূপ সংযুক্ত করার) জন্য ব্যবহার হয়েছে। অর্থাৎ, যখন ঘটনা এইরূপ নয়, তখন হে নবী! তুমি তোমার রিসালতের দায়িত্ব পালন করে যাও এবং মিথ্যাজ্ঞানকারীদের ব্যাপারে আল্লাহর ফায়সালার অপেক্ষা কর।
এখানে হযরত ইউনুস (আ)-কে صَاحِبِ الْحُوتِ ’মাছওয়ালা’ বলা হয়েছে। কেননা, তিনি কিছুকাল মাছের পেটে ছিলেন। ইউনুস (আঃ) জাতির প্রতি রাগান্বিত হয়ে আল্লাহ তা‘আলার অনুমতি ছাড়াই বের হয়ে চলে গিয়েছিলেন। তারপর যা হওয়ার তা-ই হয় অর্থাৎ তার নৌযানে সওয়ার হওয়া, মাছের তাঁকে গিলে ফেলা, মাছের সমুদ্রের গভীর তলদেশে চলে যাওয়া, সমুদ্রের অন্ধকারের মধ্যে তাঁর (আপনি ছাড়া কোন মাবুদ নেই, আপনি মহান ও পবিত্র, নিশ্চয়ই আমি যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হয়েছি) (২১ :৮৭) এই কালেমা পাঠ করা, আর তাঁর দু’আ কবুল হওয়া এবং তাঁর মুক্তি পাওয়া ইত্যাদি। এই ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ ইতিপূর্বে বর্ণিত হয়েছে। এই ঘটনা বর্ণনা করার পর মহান আল্লাহ বলেনঃ “এভাবেই আমি ঈমানদারদেরকে মুক্তি দিয়ে থাকি।” আরো বলেনঃ “যদি সে তাসবীহ পাঠ না করতো। তবে কিয়ামত পর্যন্ত সে মাছের পেটেই পড়ে থাকতো।”
এখানে মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ সে বিষাদ আচ্ছন্ন অবস্থায় কাতর প্রার্থনা করেছিল। পূর্বেই বর্ণিত হয়েছে যে, উপরোক্ত কালেমাটি হযরত ইউনুস (আঃ)-এর মুখ দিয়ে বের হওয়া মাত্রই তা আরশের উপর পৌঁছে যায়। তখন ফেরেশতাগণ বলেনঃ “হে আমাদের প্রতিপালক! এ দুর্বল শব্দ তো আমাদের নিকট পরিচিত বলে মনে হচ্ছে!” আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা’আলা তাঁদেরকে বলেনঃ “এটা কার শব্দ তা কি তোমরা বুঝতে পারছো না?” ফেরেশতারা উত্তরে বললেনঃ “জ্বী, না।” আল্লাহ তা’আলা তখন বলেনঃ “এটা (আমার বান্দা ও নবী) ইউনুস (আঃ)-এর শব্দ।” এ কথা শুনে ফেরেশতাগণ বললেনঃ “হে আমাদের প্রতিপালক! ইনি কি আপনার ঐ বান্দা যার সৎ আমলসমূহ প্রতি দিন আসমানের উপর উঠতো এবং যার প্রার্থনা সব সময় কবূল হতো?” জবাবে আল্লাহ তা’আলা বললেনঃ “হ্যাঁ, তোমরা সত্য কথাই বলছো।” ফেরেশতাগণ তখন বললেনঃ “তাহলে হে পরম করুণাময় আল্লাহ! তার। সুসময়ের সৎকার্যাবলীর ভিত্তিতে তাঁকে এই কঠিন অবস্থা হতে মুক্তি দান করুন!” তখন মহান আল্লাহ মাছকে আদেশ করলেনঃ “তুমি তাকে উগলিয়ে দাও।” মাছ তখন তাকে সমুদ্রের ধারে নিয়ে গিয়ে উগলিয়ে দিলো।
এখানে মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ পুনরায় তার প্রতিপালক তাকে মনোনীত করলেন এবং তাকে সৎকর্মপরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত করলেন।
যদি তোমার জন্য আল্লাহর প্রতিরোধ, প্রতিরক্ষা ও হিফাযত না হত, তাহলে কাফেরদের হিংসা দৃষ্টির কারণে তুমি বদ নজরের শিকার হয়ে পড়তে। অর্থাৎ, তাদের কুদৃষ্টি তোমাকে লেগে যেত। ইমাম ইবনে কাসীর (রঃ) এর এই অর্থই বলেছেন। তিনি আরো লিখেছেন যে, এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, বদনজর লেগে যাওয়া এবং আল্লাহর হুকুমে অন্যের উপর তার প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হওয়া সত্য। যেমন, অনেক হাদীস থেকেও তা প্রমাণিত। যেমন অনেক হাদীসে এ থেকে বাঁচার জন্য দু’আও বর্ণিত হয়েছে। আর তাকীদ করে বলা হয়েছে যে, যখন তোমাদেরকে কোন জিনিস ভাল লাগবে, তখন ‘মা শা-আল্লাহ’ অথবা ‘বা-রাকাল্লাহ’ বলবে। যাতে সে জিনিসে যেন বদনজর না লাগে যায়। অনুরূপ কাউকে যদি কারো বদনজর লেগে যায়, তাহলে তাকে গোসল করিয়ে তার পানি ঐ ব্যক্তির উপর ঢালতে হবে, যাকে তার বদনজর লেগেছে। (বিস্তারিত জানার জন্য দ্রষ্টব্যঃ তফসীর ইবনে কাসীর এবং অন্যান্য হাদীস গ্রন্থ) কেউ কেউ বলেন, এর অর্থ হল, ওরা তোমাকে রিসালাতের প্রচার-প্রসার থেকে ফিরিয়ে দিত।
হিংসার কারণে এবং এই উদ্দেশ্যেও যাতে লোকেরা এই কুরআন দ্বারা প্রভাবিত না হয়; বরং এ থেকে দূরে থাকে। অর্থাৎ, চক্ষু দ্বারাও কাফেররা নবী (সাঃ)-এর ক্ষতি সাধনের চেষ্টা করত, জিহ্বা দ্বারাও তাঁকে কষ্ট দিত এবং তাঁর অন্তরকে ব্যথিত করত।
এরপর আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ হে নবী (সঃ)! কাফিররা যখন কুরআন শ্রবণ করে তখন তারা যেন তাদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দ্বারা তোমাকে আছড়িয়ে ফেলে দিবে এবং তারা বলেঃ এতো এক পাগল! আল্লাহ তা’আলা তাদের এ কথার জবাবে বলেনঃ “কুরআন তো বিশ্বজগতের জন্যে উপদেশ।”
আয়াতে كَيْدِ (কাইদি) শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। এর অর্থ হলো কারো বিরুদ্ধে গোপনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। কাউকে অন্যায়ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে এরূপ করা হলে তা খুব খারাপ কাজ। অন্যথায় এরূপ কাজে কোন দোষ নেই। বিশেষ করে কোন ব্যক্তি যদি নিজেই নিজের বিরুদ্ধে এরূপ করার বৈধতা সৃষ্টি করে নিজেকে এর উপযুক্ত বানিয়ে নেয়।
এরপর মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ হে নবী (সঃ)! তুমি তো তাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাচ্ছ না যা তাদের উপর খুবই ভারী বোধ হচ্ছে? যার ভার বহন করতে তারা একেবারে ঝুঁকে পড়ছে? তাদের কি অদৃশ্যের জ্ঞান আছে যে, তারা তা লিখে রাখে। এ দু’টি বাক্যের তাফসীর সূরা তুরে বর্ণিত হয়েছে। ভাবার্থ হচ্ছেঃ হে নবী (সঃ)! তুমি তো তাদেরকে মহামহিমান্বিত আল্লাহর পথে আহ্বান করছো বিনা পারিশ্রমিকে! তাদের কাছে তো তুমি এর বিনিময়ে কোন ধন-সম্পদ যাচঞা করছে না। পুণ্য লাভ করা ছাড়া তোমার তো অন্য কোন উদ্দেশ্য নেই! তথাপিও এ লোকগুলো তোমাকে অবিশ্বাস করতে রয়েছে! এর একমাত্র কারণ হচ্ছে তাদের অজ্ঞতা ও ঔদ্ধত্যপনা।
ফুটনোট
আল্লাহর পরীক্ষার বাস্তবতাঃ আল্লাহ মানবজাতিকে বিভিন্নভাবে পরীক্ষা করেন। মক্কাবাসীদের ওপর দুর্ভিক্ষের মাধ্যমে পরীক্ষা যেমন হয়েছিল, তেমনি বাগানের মালিকদের ওপর পরীক্ষার দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হয়েছে। ধন-সম্পদ দিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করলে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে তুলে নেওয়া হয়।
‘ইনশাআল্লাহ’ বলার গুরুত্বঃ বাগানের মালিকরা তাদের পরিকল্পনায় ‘ইনশাআল্লাহ’ বলা এড়িয়ে গিয়েছিল। এটি তাদের অহংকারের বহিঃপ্রকাশ ছিল। প্রতিটি কাজে আল্লাহর ইচ্ছার প্রতি নির্ভরতা প্রকাশ করা উচিত।
গরীব-মিসকীনদের অধিকারঃ বাগানের মালিকরা ফকীর-মিসকীনদের অধিকার নষ্ট করার ষড়যন্ত্র করেছিল। ফলে তারা নিজেদের ধ্বংস ডেকে এনেছিল। তাই সমাজে ধনীদের কর্তব্য হলো গরীবদের প্রতি সদয় হওয়া এবং তাদের প্রয়োজন পূরণে সহায়তা করা।
আল্লাহর শাস্তির দ্রুততা ও বাস্তবতাঃ বাগান ধ্বংস হওয়ার ঘটনা দেখায়, আল্লাহ শাস্তি প্রদান করতে দেরি করেন না। এটি দুনিয়ার শাস্তি, যা আখিরাতের কঠিন শাস্তির পূর্বাভাস মাত্র।
গুনাহর পরিকল্পনা করাও অপরাধঃ কেবল পাপ কাজ করাই নয়, এমনকি পাপের পরিকল্পনাও শাস্তিযোগ্য। বাগানের মালিকরা ফল চুরি করে আনার পরিকল্পনা করেছিল, যা তাদের ধ্বংস ডেকে এনেছে।
তওবা ও আল্লাহর ক্ষমাঃ বাগানের মালিকরা গুনাহ করার পর তারা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে অনুতপ্ত হয়ে তওবা করেছে। আল্লাহর প্রতি তাদের আশা প্রকাশ করে বলেছেন, “আমাদের রব নিশ্চয় আমাদের ভালো কিছু দান করবেন।”
দুনিয়ার পরীক্ষার শিক্ষণীয়তাঃ দুনিয়ার শাস্তি মানুষকে সংশোধন করতে পারে, কিন্তু আখিরাতের শাস্তি চিরস্থায়ী এবং আরও কঠিন। আল্লাহ বলেন, “শাস্তি এরূপই হয়ে থাকে, কিন্তু আখিরাতের শাস্তি আরও ভয়াবহ।”
মুত্তাকীদের পুরস্কার ও অপরাধীদের শাস্তিঃ যারা আল্লাহর আনুগত্যশীল (মুত্তাকি), তাদের জন্য জান্নাতের প্রতিশ্রুতি রয়েছে। অপরাধীদের অবস্থান কখনোই মুত্তাকীদের সমান হতে পারে না। এটি আল্লাহর ন্যায়বিচারের মৌলিক নিয়ম।
অহংকার ও অবজ্ঞার পরিণতিঃ বাগানের মালিকরা আল্লাহর প্রতি নির্ভর না করে নিজেদের শক্তির ওপর আস্থা রেখেছিল। এটি তাদের সম্পদ ধ্বংসের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
বিচারের ন্যায্যতাঃ আল্লাহ কখনোই ঈমানদার ও পাপীদের সমান গণ্য করবেন না। তিনি সকল কর্মের যথাযথ বিচার করবেন। এটা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, আমাদের প্রতিটি কাজের জন্য আমরা আল্লাহর কাছে দায়বদ্ধ।
কুরআনের সঠিক অনুসরণঃ কুরআন মানুষকে সঠিক পথ প্রদর্শন করে। এতে নিজেদের ইচ্ছার বিচার বা মনগড়া ব্যাখ্যা প্রযোজ্য নয়। আমাদের উচিত কুরআন অধ্যয়ন করে আল্লাহর নির্দেশ মেনে চলা।
ধৈর্যের গুরুত্বঃ আল্লাহ তাঁর নবী (সঃ)-কে নির্দেশ দেন ধৈর্য ধরতে। এ শিক্ষাটি আমাদের জীবনে যেকোনো বিপদ বা পরীক্ষায় ধৈর্য ধারণ করার প্রেরণা দেয়।
ঔদ্ধত্য ও অবিশ্বাসের পরিণতিঃ যারা অহংকার করে আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে, তাদের শাস্তি অবশ্যম্ভাবী। দুনিয়ায় তারা অশান্তি ও পরকালে লাঞ্ছনার সম্মুখীন হবে।
তওবা ও আত্মসমর্পণের গুরুত্বঃ হযরত ইউনুস (আঃ)-এর ঘটনা থেকে শিক্ষা নেওয়া যায় যে, বিপদে আল্লাহর দিকে ফিরে আসা এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত। তাঁর দয়া ছাড়া কেউ মুক্তি পাবে না।
বদনজরের বাস্তবতাঃ বদনজর বাস্তব এবং এর প্রভাব থেকে বাঁচতে আল্লাহর ওপর ভরসা করতে হবে এবং সতর্ক থাকতে হবে। এ জন্য দোয়া ও আল্লাহর স্মরণ গুরুত্বপূর্ণ।
মুমিনদের জন্য উপদেশঃ কুরআন সমগ্র সৃষ্টির জন্য উপদেশস্বরূপ প্রেরিত। আমাদের উচিত কুরআনের প্রতি গভীর মনোযোগ দেওয়া এবং এর বার্তা জীবনে বাস্তবায়ন করা।