Notes 12: Sura Dahr 23 to 31

কুরআন অধ্যয়ন প্রতিযোগিতা ২০২২

প্রস্তুতি সহায়ক তাফসীর নোট পর্বঃ ১২

এখানে বাহ্যত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সম্বোধন করা হলেও বক্তব্যের মূল লক্ষ কাফেররা৷ মক্কার কাফেররা বলতো, এ কুরআন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে চিন্তা-ভাবনা করে রচনা করেছেন৷ অন্যথায়, আল্লাহ তা”আলার পক্ষ থেকে কোন ফরমান এলে তা একেবারেই এসে যেতো৷ কুরআনে কোন কোন যায়গায় তাদের এ অভিযোগ উদ্ধৃত করে তার জবাব দেয়া হয়েছে৷ উদাহরণস্বরূপ-

আর এ কুরআনকে আমি সামান্য সামান্য করে নাযিল করেছি, যাতে তুমি থেমে থেমে তা লোকদেরকে শুনিয়ে দাও এবং তাকে আমি (বিভিন্ন সময়) পর্যায়ক্রমে নাযিল করেছি৷ (সূরা বনী ইসরাঈল ১০৬)

এদেরকে বলো, একে তো রূহুল কুদুস ঠিক ঠিকভাবে তোমার তোমার রবের পক্ষ থেকে পর্যায়ক্রমে নাযিল করেছে,যাতে মুমিনদের ঈমান সুদৃঢ় করা যায়, (সূরা নাহল ১০২)

এখানে তাদের অভিযোগ উদ্ধৃত না করেই আল্লাহ তা”আলা অত্যন্ত বলিষ্ঠভাবে ঘোষণা করেছেন যে, কুরআনের নাযিলকারী আমি নিজেই৷ অর্থাৎ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর রচয়িতা নন৷ আমি নিজেই তা ক্রমান্বয়ে নাযিল করেছি৷

তার পর্যায়ক্রমে এ বাণী আসার এবং একই সময় সবকিছু না নিয়ে আসার কারণ এ নয় যে, আল্লাহর জ্ঞান ও প্রজ্ঞার মধ্যে কোন ক্রটি আছে, যেমন তোমরা নিজেদের অজ্ঞতার কারণে বুঝে নিয়েছো ৷ বরং এর কারণে হয়েছে এই যে, মানুষের বুদ্ধিবৃত্তি, বোধশক্তি ও গ্রহণ শক্তির মধ্যে ত্রুটি রয়েছে, যে কারণে একই সংগে সে সমস্ত কথা বুঝতে পারে না এবং একই সময় বুঝানো সমস্ত কথা তার মনে দৃড়ভাবে বদ্ধমূলও হতে পারে না ৷ তাই মহান আল্লাহ আপনা প্রজ্ঞা বলে এ ব্যবস্থা করেন যে, জিবরাঈল এ কালামকে সামান্য সামান্য করে আনবেন৷ কখনো সংক্ষেপে আবার কখনো বিস্তারিত বর্ণনার আশ্রয় নেবেন ৷ কখনো এক পদ্ধতিতে বুঝাবেন আবার কখনো অন্য পদ্ধতিতে৷ কখনো এক বর্ণনা রীতি অবলম্বন করবেন আবার কখনো অবলম্বন করবেন অন্য বর্ণনা রীতি৷ একই কথাকে বারবার বিভিন্ন পদ্ধতিতে হৃদয়ংগম করার চেষ্টা করবে, যাতে বিভিন্ন যোগ্যতা সম্পন্ন সত্যানুসন্ধানীরা ঈমান আনতে পারে এবং ঈমান আনার পর তাদের জ্ঞান, বিশ্বাস, প্রত্যয় বোধ ও দৃষ্টি পাকাপোক্ত হতে পারে৷

অর্থাৎ তোমার “রব” তোমাকে যে বিরাট কাজ আঞ্জাম দেয়ার আদেশ দিয়েছেন তা আঞ্জাম দেয়ার পথে যে দুঃখ-যাতননা ও বিপদ-মুসিবত আসবে তার জন্য “সবর”করো৷ যাই ঘটুক না কেন সাহস ও দৃঢ়তার সাথে তা বরদাশত করতে থাকো৷ এবং এ দৃঢ়তা ও সাহসিকতায় যেন কোন বিচ্যুতি আসতে না পারে৷

 

কোন পাপিষ্ঠ বা ঘোর অকৃতজ্ঞ কাফিরের আনুগত্য করবেন না-

اٰثِم- শব্দের অর্থ হলো গুনাহগার বা পাপিষ্ঠ। যে কোনো গুনাহে লিপ্ত লোকে اٰثِم বলে।

كفورا শব্দের অর্থ হলো- অবাধ্যাচারী, সত্য দ্বীন অস্বীকার কারী। তাই সকল গুনাহগার كَفورا নয়। সকল كَفورا ই হলো পাপিষ্ঠ।

তাদের কারো চাপে পড়ে দীনে হকের প্রচার ও প্রসারের কাজ থেকে বিরত হয়ো না এবং কোন দুষ্কর্মশীলের কারণে দীনের নৈতিক শিক্ষায় কিংবা সত্য অস্বীকারকারীর কারণে দীনের আকীদ-বিশ্বাসে বিন্দুমাত্র পরিবর্তন করতেও প্রস্তুত হয়ো না ৷ যা হারাম ও নাজায়েজ তাকে খোলাখুলি হারাম ও নাজায়েয বলো, এর সমালোচনার ব্যাপারে কিছুটা নমনীয় হওয়ার জন্য কোন দুষ্কর্মশীল যতই চাপ দিক না কেন৷ যেসব আকীদা-বিশ্বাস বাতিল তাকে খোলাখুলি বাতিল বলে ঘোষণা করো৷ আর যা হক তাকে প্রকাশ্যে হক বলে ঘোষণা করো, এ ক্ষেত্রে কাফেররা তোমার মুখ বন্ধ করার জন্য কিংবা এ ব্যাপারে কিছুটা নমনীয়তা দেখানোর জন্য তোমার ওপর যত চাপই প্রয়োগ করুক না কেন৷

আরবী ভাষায় বুকরাতান শব্দের অর্থ সকাল৷আর আছিলা শব্দটি সূর্য মাথার ওপর থেকে হেলে পড়ার সময় হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময় বুঝাতে ব্যবহার করা হয় যার মধ্যে যোহর এবং আসরের সময়ও শামিল৷

কুরআনের প্রতিষ্ঠিত রীতি হলো যেখানেই কাফেরদের মোকাবিলায় ধৈর্য ও দৃঢ়তা দেখানোর উপদেশ দেয়া হয়েছে সেখানে এর পরপরই আল্লাহকে স্মরণ করার ও নামাযের হুকুম দেয়া হয়েছে৷ এ থেকে আপনা আপনি প্রকাশ পায় যে, সত্য দীনের পথে সত্যের দুশমনদের বাধার মোকাবিলা করার জন্য যে শক্তির প্রয়োজন তা এভাবেই অর্জিত হয়৷ সকাল ও সন্ধায় আল্লাহকে স্মরণ করার অর্থ সবসময় আল্লাহকে স্মরণ করাও হতে পারে৷ তবে সময় নির্দিষ্ট করে যখন আল্লাহকে স্মরণ করার হুকুম দেয়া হয় তখন তার অর্থ হয় নামায৷ আগের আয়াতে আল্লাহ তা”আলা বলেছেন যোহর এবং আসরের কথা এরপর বলেছেনঃ وَ مِنَ الَّیۡلِ ৷রাত শুরু হয় সূর্যাস্তের পরে৷ তাই রাতের বেলা সিজদা করার নির্দেশের মধ্যে মাগরিব এবং “ঈশার দু”ওয়াক্তের নামাযই অন্তরভুক্ত হয়ে যায়৷ এর পরের কথাটি “রাতে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত তাঁর তাসবীহ বা পবিত্রতা বর্ণনা কর” তাহাজ্জুদ নামাযের প্রতি স্পষ্টভাবে ইংগিত করে৷ এ থেকে একথাও জানা গেল যে, ইসলামে প্রথম থেকে এগুলোই ছিল নামাযের সময়৷ তবে সময় ও রাক”আত নির্দিষ্ট করে পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরয হওয়ার হুকুম দেয়া হয়েছে মে”রাজের সময়৷

সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করবেন কেন?

وَ لَذِکۡرُ اللّٰهِ اَکۡبَرُ আর আল্লাহর স্মরণই সর্বশ্রেষ্ঠ।’ (সুরা আনকাবুত : আয়াত ৪৫)

এ আয়াতেরর কয়েকটি অর্থ হতে পারে। এক. আল্লাহকে স্মরণ করা সবচেয়ে বড় ইবাদত। আর নামাজ বড় ইবাদত হওয়ার কারণও আল্লাহর জিকির। সুতরাং যে নামাজে বেশিবেশি জিকির হয় সে নামাজ সবচেয়ে উত্তম।  দুই. আল্লাহকে স্মরণ করা সর্বশ্রেষ্ঠ কাজ। মানুষের জন্য আল্লাহকে স্মরণ করার চেয়ে বড় কোনোকাজ আর নেই।  তিন. দুনিয়ায় অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে মানুষকে বিরত রাখতে ‘আল্লাহর স্মরণ’ অনেক কার্যকরী

 

* আল্লাহর স্মরণকারী নারী-পুরুষের জন্য ক্ষমা ও প্রতিদান

وَ الذّٰکِرِیۡنَ اللّٰهَ کَثِیۡرًا وَّ الذّٰکِرٰتِ ۙ اَعَدَّ اللّٰهُ لَهُمۡ مَّغۡفِرَۃً وَّ اَجۡرًا عَظِیۡمًا

‘আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী নারী; এদের জন্য রয়েছে আল্লাহ ক্ষমা এবং তিনি মহাপ্রতিদানও রেখেছেন।’ (সুরা আহজাব : আয়াত ৩৫)

 

* আল্লাহর স্মরণেই জাহান্নাম থেকে মুক্তি

اِنَّ فِیۡ خَلۡقِ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ وَ اخۡتِلَافِ الَّیۡلِ وَ النَّهَارِ لَاٰیٰتٍ لِّاُولِی الۡاَلۡبَابِ – الَّذِیۡنَ یَذۡکُرُوۡنَ اللّٰهَ قِیٰمًا وَّ قُعُوۡدًا وَّ عَلٰی جُنُوۡبِهِمۡ وَ یَتَفَکَّرُوۡنَ فِیۡ خَلۡقِ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ

‘নিশ্চয়ই আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টিতে এবং রাত ও দিনের পরিবর্তনে জ্ঞানী লোকেদের জন্য রয়েছে নিদর্শন। যারা দাঁড়িয়ে, বসে এবং শুয়ে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি সম্বন্ধে চিন্তা করে এবং (বলে)-

رَبَّنَا مَا خَلَقۡتَ هٰذَا بَاطِلًا ۚ سُبۡحٰنَکَ فَقِنَا عَذَابَ النَّارِ

উচ্চারণ : ‘রাব্বানা মা খালক্বতা হাজা বাত্বিলাং সুবহানাকা ফাক্বিনা আজাবান্নার।’

অর্থ : ‘হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি এসব নিরর্থক সৃষ্টি করনি। তুমি পবিত্র। তুমি আমাদেরকে আগুনের শাস্তি থেকে রক্ষা কর।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৯০-১৯১)

 

* আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ রাখার নির্দেশ

‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমাদের ধন-সম্পত্তি ও সন্তান- সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ হতে উদাসিন না করে, যারা উদাসীন হবে, তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত।’ (সুরা মুনাফিকুন : আয়াত ৯)

আরো দেখুন- সুরা নুর : আয়াত ৩৭, সুরা আরাফ : আয়াত ২০৫, সুরা আনফাল : আয়াত ৪৫, সুরা বাকারা : আয়াত ২০০,  সুরা জুমআ : আয়াত ১০, সুরা সাফফাত : আয়াত ১৪৩-১৪৪, সুরা মযযাম্মিল : আয়াত ৭-৮, ,

* জিকির থেকে বিরত না থাকতেও কঠোর সতর্কতা জারি করেছেন এভাবে-

اَفَمَنۡ شَرَحَ اللّٰهُ صَدۡرَهٗ لِلۡاِسۡلَامِ فَهُوَ عَلٰی نُوۡرٍ مِّنۡ رَّبِّهٖ ؕ فَوَیۡلٌ لِّلۡقٰسِیَۃِ قُلُوۡبُهُمۡ مِّنۡ ذِکۡرِ اللّٰهِ ؕ اُولٰٓئِکَ فِیۡ ضَلٰلٍ مُّبِیۡنٍ

‘আল্লাহ ইসলামের জন্য যার বুক উন্মুক্ত করে দিয়েছেন, ফলে সে তার প্রভু থেকে (আগত) আলোর মধ্যে আছে। সে কি তার সমান- যে এরূপ নয়? সুতরাং দুর্ভোগ তাদের জন্য, যাদের অন্তর আল্লাহর স্মরণে কঠিন, ওরাই স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছে।’ (সুরা যুমার : আয়াত ২২)

মক্কার কাফেররা যে কারণে আখলাক ও আকীদা-বিশ্বাসের ক্ষেত্রে গোমরাহীকে আঁকড়ে ধরে থাকতে আগ্রহী এবং তাদের কান নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সত্যের আহবানের প্রতি অমনযোগী, প্রকৃতপক্ষে সে কারণ হলো, তাদের দুনিয়া-পূজা এবং আখেরাত সম্পর্কে নিরুদ্বিগ্নতা, উদাসীনতা ও বেপরোয়া ভাব।

এ আয়াতাংশের কয়েকটি অর্থ হতে পারে। একটি অর্থ হতে পারে, যখনই ইচ্ছা আমি তাদের ধ্বংস করে তাদের স্থলে অন্য মানুষদের নিয়ে আসতে পারি, যারা তাদের কাজ-কর্ম ও আচার-আচরণে এদের থেকে ভিন্ন প্রকৃতির হবে। এর দ্বিতীয় অর্থ হতে পারে, যখনই ইচ্ছা আমি এদের আকার-আকৃতি ও গুণাবলি নিকৃষ্টরূপে পরিবর্তন করে দিতে পারি।

অর্থাৎ, আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতিরেকে তোমাদের কোন ইচ্ছা সফল হতে পারে না।) অর্থাৎ, তোমাদের মধ্যে কারো এ সামর্থ্য নেই যে, সে নিজেকে হিদায়াতের পথে প্রতিষ্ঠিত এবং নিজের জন্য কোন কল্যাণের ব্যবস্থা করে নেবে। হ্যাঁ, যদি আল্লাহ চান তবে এ রকম করা সম্ভব হবে। তাঁর ইচ্ছা ছাড়া তোমরা কিছুই করতে পারবে না। তবে মনের নিয়ত (সংকল্প) সৎ ও সঠিক হলে তিনি নেকী অবশ্যই দেন। إِنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ وَإِنَّمَا لِكُلِّ امْرِئٍ مَا نَوَى ‘‘সমস্ত কাজ (এর নেকী) নিয়তের উপর নির্ভরশীল। আর প্রত্যেক ব্যক্তি তা-ই পাবে, যার সে নিয়ত করবে।’’ (বুখারী)

যেহেতু তিনি প্রজ্ঞাময় ও সুকৌশলী, তাই তাঁর প্রতিটি কাজে হিকমত ও যৌক্তিকতা আছে। অতএব হিদায়াত এবং ভ্রষ্টতার ফায়সালাও কোন বিচার-বিবেচনা ছাড়াই যে হয়, তা নয়। বরং যাকে তিনি হিদায়াত দান করেন প্রকৃতপক্ষে সে হিদায়াতের যোগ্য থাকে। আর যার ভাগে ভ্রষ্টতা জোটে, সে আসলেই তার উপযুক্ত থাকে।

এ আয়াতে জালেম বলে সেসব লোককে বুঝানো হয়েছে যাদের কাছে আল্লাহর বাণী এবং তাঁর নবীর শিক্ষা আসার পর তারা অনেক চিন্তা-ভাবনা ও বিচার -বিবেচনার পর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে যে, তার আনুগত্য তারা করবে না৷ এর মধ্যে সেসব জালেমও আছে যারা পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছে আমরা এ বাণীকে আল্লাহর বাণী এবং এ নবীকে আল্লাহর নবী বলে মানি না৷ অথবা আল্লাহকেই আদৌ মানি না৷আবার সেসব জালেমও আছে যারা আল্লাহ, নবী ও কুরআনকে মানতে অস্বীকার করে না বটে কিন্তু সিদ্ধান্ত তাদের এটাই থাকে যে, তারা তার আনুগত্য করবে না৷ প্রকৃতপক্ষে এ দুটি গোষ্ঠিই জালেম ৷ প্রথম গোষ্ঠির ব্যাপারটা তো স্পষ্ট৷ কিন্তু দ্বিতীয় গোষ্টীও তাদের চেয়ে কোন অংশে কম জালেম নয়৷ বরং জালেম হওয়ার সাথে সাথে তারা মুনাফিক এবং প্রতারকও৷ তারা মুখে বলে, আমরা আল্লাহকে মানি,কুরআনকে মানি৷ কিন্তু তাদের মন ও মগজের ফায়সালা হলো, তারা অনুসরণ করবে না ৷ আর তারা কাজও করে এর পরিপন্থী৷ এ দু শ্রেণীর মানুষ সম্পর্কেই আল্লাহ তাআলার ঘোষণা হলো, আমি তাদের জন্য কষ্টদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি৷ দুনিয়াতে তারা যতই নির্ভীক ও বেপরোয়া চলুক, আরাম আয়েশে বিভোর থাকুক এবং নিজের বাহাদুরীর ডাংক বাজাক না কেন অবশেষে তাদের পরিণাম কঠোর শাস্তি ছাড়া কিছুই নয়৷ আল্লাহর রহমতের মধ্যে প্রবেশ করা তাদের ভাগ্যলিপিতেই নেই৷

ফুটনোট

* কুরআন দীর্ঘ ২৩ বছরের ক্রমে ক্রমে সময়ের আলোকে।

* কুরআন নাযিল করার কথা বলে কিছু করনীয় কথা বলা হয়েছে তারপর শেষ তিন আয়াতে বলা হয়েছে এই কুরআন হলো উপদেশ মাত্র যারা এই উপদেশের আলোকে জীবনে গঠন করবে তাদের জন্য রয়েছে পুরস্কার আর যারা এই উপদেশ মেনে চলে না তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।

* সেই করনীয়গুলো হলো-

১. সবর করা

২. রাতের কিছু সময় নামাজ পড়া

৩. রাতের আরো কিছু সময় আল্লাহকে স্মরণ করা (যিকির/তিলাওয়াত)

৪. সকাল-সন্ধ্যা আল্লাহকে স্মরণ করা

* ব্যক্তি সে নিজেকে হিদায়াতের পথে প্রতিষ্ঠিত এবং নিজের জন্য কোন কল্যাণের ব্যবস্থা করতে পারে না। হ্যাঁ, যদি আল্লাহ চান তবে এ রকম করা সম্ভব হবে। তাঁর ইচ্ছা ছাড়া তোমরা কিছুই করতে পারবে না। তাই সব সময় আল্লাহ্‌র কাছে হেদায়াতের পাওয়া ও তাঁর উপর প্রতিষ্ঠিত থাকার দোয়া করা উচিত।